(ভাল ছেলে-মেয়েদের জন্য নয়)
প্রাক কথনঃ
নেটে পড়ছিলাম হ্যাকিং-এর টিউটোরিয়াল। এক যায়গায় লেখা দেখলাম "হ্যাকিং থেকে বাচার সব চেয়ে কার্যকর উপায় হলো হ্যাকিংটাই শিখে ফেলা।"
কথাটা পড়ার পরেই মনে হলো কম্পিউটার হ্যাকিং এর চেয়েও ভয়াবহ এক রকম হ্যাকিং আছে। সেটা হলো "মন হ্যাকিং"। বলা হয়ে থাকে hacking is not a crime. হ্যা। কম্পিউটার হ্যাকিং এর ক্ষেত্রে কথাটা যায়। কিন্তু মন হ্যাকিং এর ক্ষেত্রে এটা যায় না। বরং এই হ্যাকিংটা হচ্ছে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম ও জঘন্যতম পাপ।
যাই হোক, অই লাইনটার মতো করে বলি, "মন হ্যাকিং থেকে বাচার সব চেয়ে কার্যকর উপায় হলো নিজেই মন হ্যাকিং শিখে ফেলা"।
এই পোস্ট-টা আসলে লেখা হয়েছে এই দৃষ্টিকোন থেকেই।
তাহলে শুরু করা যাক আমাদের টিউটোরিয়াল।
মালটিপল রিলেশন কি?
উত্তরঃ মান ও হুশ-এর অভাবে একই সময়ে একাধিক ছেলে/মেয়ের সাথে প্রেম চালিয়ে(প্রতারনার সাথে) যাওয়াকে বলা হয়ে থাকে মালটিপল রিলেশন।
উদাহারণঃ মেয়ে ১ প্রেম করছে ছেলে ১ এর সাথে। হঠাৎ করে মেয়ে ১ ছেলে ২ এর সাথে প্রেম করা ডেটিং-এ যাওয়া শুরু করলো। এই অবস্থাকে বলা হয়ে থাকে মাল্টিপল রিলেশন।
কেন মানুষ মাল্টিপল রিলেশনে জড়ায়ঃ
১। পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার।
২। যথাযথ পারিবারিক শিক্ষার অভাব।
৩। নৈতিক শিক্ষার অভাব।
৪। বিকৃত মানষিকতা।
৫। চারিত্রিক অধঃপতন।
প্রথম ধাপঃ
এই ধাপে আপনাকে কিছু ব্যাপার একদম ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। ব্যাপারগুলো হলোঃ
> আত্মসম্মানবোধ
> মনুষত্ব
> বিবেকবোধ
> মান+হুশ
> লজ্জা
দ্বিতীয় ধাপঃ
এই ধাপে আপনাকে কিছু ব্যাপার অর্জন করতে হবে। ব্যাপারগুলো হলোঃ
> পৈশাচিকতা
> মিথ্যা বলার অপূর্ব ক্ষমতা
> প্রতারণা করতে একটুও কেপে উঠেনা এ রকম একটা হার্ট
> অসম্ভব রকম চতুর বুদ্ধি
> কান্নাকাটি করার ক্ষমতা(মেয়েদের ক্ষেত্রে)
> স্ট্রিক্টলি কিছু বলে ফেলার ক্ষমতা(ছেলেদের ক্ষেত্রে)
> অভিনয় করার অপূর্ব গুন।
> ইমোশোনালী ব্ল্যাকমেইল করায় অসম্ভব দক্ষতা।
> ভন্ডামি।
পার্টনার নির্বাচন-
এই ধাপে আপনাকে নিচের সতর্কতাগুলো অনুসরণ করত হবে।
> প্রথমেই নির্বাচন করুন দু-জন ভালো মানুষ।
> কারণ ভালো মানুষরা সবাইকে ভালো মনে করে।
> আপনার মতো কুৎসিত চিন্তাভাবনার কেউ হলে সমস্যা। পার্টনার কুৎসিত/লম্পট হলে আপনার লাম্পট্যও(সরি, আপনার জন্য এর চেয়ে সভ্য কোন শব্দ আমি খোজে পাচ্ছি না) ধরা পড়ার চান্স থাকবে বেশি।
বাড়তি সতর্কতা
> দুজন পার্টনার যাতে একে অপরের পরিচিত না হয়।
> পরিচিত হলে বিরাট বিপদ। এ ক্ষেত্রে এমন ব্যাবস্থা করুন যাতে তাদের দুজনের দেখা বা কথা না হয়।
জটিলতা মোকাবেলা
এই ধাপটা হচ্ছে সব চেয়ে ভয়ংকর ও গুরত্বপূর্ন ধাপ। এই ধাপের নির্ভর করছে অনেক কিছু।
স্বাভাবিকভাবেই দুই পার্টনারের কাছ থেকে শুনবেন অসংখ্য প্রশ্ন। এই ধাপে আপনাকে কমন কিছু প্রশ্ন ও সেইসব প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে ধারণা দেয়া হলোঃ
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে তোমার এতো কি?
উত্তরঃ ঐ ছেলে/মেয়ে আমার ফ্রেন্ড। বেস্ট ফ্রেন্ড। মহা আপনা বান্ধব।(কন্ঠে কনফিডেন্স ঝরে পড়বে)
প্রশ্নঃ তোমার বয়/গার্ল ফ্রেন্ডের থেকে ঐ ছেলে/মেয়েকে প্রাধান্য দিচ্ছো কেনো?
উত্তরঃ তোমার কারনে আমি একটা ফ্রেন্ডশিপও রাখতে পারবো না? ছিহহহ(হ এর উপর জোর দিন)। তুমি এতো খারাপ? তোমার মন এতো ছোট?(আহা! আপনার মন বিরাট বড়। এক মনে কতোজনকে যায়গা দিতে পারেন। মাশআল্লাহ!)
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়েকে আমাদের রিলেশনের কথা জানাচ্ছো না কেনো?
উত্তরঃ আমি কেনো তাকে আমার ব্যাক্তিগত ব্যাপারে জানাবো?(উলে বাবা!)
প্রশ্নঃ দুনিয়ার সবাইকে জানাচ্ছো। ওকে জানাতে সমস্যা কি?
উত্তরঃ কান্নাকাটি(কারণ এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে নেই)
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে যোগাযোগ কমাবা?
উত্তরঃ কমাবো।(হা হা!)
স্বাভাবিকভাবেই আপনি যোগাযোগ কমাতে পারবেন না। তখন আবার প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন।
প্রশ্নঃ তুমি কাকে চাও? আমাকে না তোমার ফ্রেন্ডকে?
উত্তরঃ ছিহ। তুমি আমাকে সন্দেহ করো? (ন্দ এর উপর জোর দিয়ে)
প্রশ্নঃ প্লিজ, সব কিছু ক্লিয়ার করো। আমি পেইনে আছি।
উত্তরঃ তুমি আমাকে লম্পট/প্রস্টিটিউট মনে করো?(খেয়াল করে দেখুন। আপনি নিজেই কিন্তু নিজেকে লম্পট/প্রস্টিটিউট হিসেবে স্বিকৃতি দিচ্ছেন। হা হা হা)
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে ফোনে কথা হয় তোমার?
উত্তরঃ নাহ। ওকে আমি ব্লক করবো পরে। টাকা ভরে নেই ফোনে।(আরে ধুর। ব্লক করতে হবে না। টাকা ভরে আবার রোমান্টিক কথোপকথন শুরু করবেন। ব্লক করতে যাবেন কেনো?)
এক পর্যায়ে দুই পার্টনারই আপনাকে চাপ দিবে। ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে তৃতীয় ছেলে/মেয়েকে বাদ দেয়ার জন্য।
এই ধাপটার আপনার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ। আপনি কাকে বাদ দিবেন?
সিদ্ধান্ত নিন নিচের ব্যাপারগুলো উপর ভিত্তি করে।
- কে আপনার জন্য বেশি ডেডিকেটেড?
- কে আপনি যাই করবেন তা মেনে নিবে?
- কে আপনার সব অন্যায় দেখেও বেশিরভাগ সময় বিশ্বাসের উপর জোর দিয়ে ভুলে যায় সব?
- কাকে আপনি সব চেয়ে ইজিলি ইউজ করতে পারেন?
উত্তর যার পক্ষে যাবে তাকেই ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে কাটুন।
পরবর্তিতে যুক্তি দেখানঃ
- এই জানো? আমার ভাইয়া না আমার ফেসবুক মনিটরিং করে।
- তুমি আমাকে লাইফে চাও নাকি ফেসবুকে চাও?
- ছিহ! আমাকে পাওয়ার জন্য ফেসবুক থেকে কাটতে পারবা না? এই তোমার ভালোবাসা?
কি বললেন? জঘন্য মিথ্যা আর প্রতারনার জন্য তীব্র অপরাধবোধ সৃষ্টি হবে? আরে ধুর। "অপরাধবোধ" শব্দটা কেবল মানুষের সাথেই যায়। সৌভাগ্যজনকভাবে আপনি এটা অনুভব করে কষ্ট পাবেন না। কারণ আপনার মাঝে ন্যুনতম মনুষত্বও নেই(সরি টু স্যা)।
মোবাইল সংক্রান্ত ঝামেলাঃ
যেহেতু একসাথে একাধিক প্রেম করছেন তাই বিভিন্ন সময় আপনাকে ফোনে কথা চালিয়ে যেতে হবে। কল ওয়েটিং কিংবা বিজি রাখলে সমস্যা হতে পারে। তাই বিজি ডাইভার্ট করে রাখুন।
এক পার্টনারের সাথে কথা বলার সময় অন্য পার্টনার ট্রাই করবে। পরবর্তিতে প্রশ্নের সম্মুখিন হবেন। সমস্যা নেই। উত্তর আছে রেডিমেইড।
- আরে ধুর! মা ফোন করেছিলেন।
- কথা বলছিলাম ফুপাতো বোনের চাচার ছোট মেয়ের দাদার আপন ছেলের সাথে(প্রায় ঘন্টা খানেক কথা বলছিলেন কিন্তু)
- আমার টিচার ফোন করেছিলেন।
- নোট বুঝে নিচ্ছিলাম।
ইত্যাদি ইত্যাদি...।
ডেটিং সংক্রান্ত ঝামেলাঃ
যেহেতু দুই যায়গায় করছেন প্রেম সেহেতু ডেটিং-এও যেতে হবে। একজনের সাথে ডেটিং-এ যাওয়ার পর অন্যজনকে বুঝ দিতে পারেন এভাবেঃ
- এই আজকে না আব্বুর অফিসে যাবো। তুমি এর মাঝে আমাকে ফোন দিও না।
- এখন যাবো অগ্রনী ব্যাংকে। ওখানে ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত ঝামেলা আছে কিছু আমার।
- একটু শপিং-এ যাচ্ছি।
- বাংলাদেশ ব্যাংকে যাবো। কাজ আছে।
নির্লজ্জ্বতা আর নষ্টামীর সব সীমা অতিক্রম করুন এভাবেঃ
- এক পার্টনারকে বলুন অন্য পার্টনার আপনার রিলেশনে ঝামেলা করছে।
- এক পার্টনারের কাছ থেকে এস এম এস নিয়ে অন্য পার্টনারকে খুশি করুন।
- ফেসবুকে অপেনলি চালিয়ে যান দুইটা প্রেম।
- কেউ কিছু বললে চোখ বন্ধ করে অস্বীকার করুন সব।
আনুসাঙ্গিক ঝামেলা মোকাবেলাঃ
ফেসবুকে আপনার লাম্পট্য দেখবে অনেকেই। পার্টনারের ভাই ব্রাদাররা সেটা দেখে আপনাকে ভালো রকম সন্দেহ করবে। অনেকে বলবে অনেক কথা। আপনার ওসব গায়ে মাখলে চলবে না। হাজার হোক আত্মসম্মানবোধ তো আপনার নেই! যাই হোক এই পরিস্থিতি ট্যাকল করবেন এভাবেঃ
- ও আমাকে এরকম কথা বললো। আমি নাকি দুইটা প্রেম করি। ওকে ব্লক করো।
- তোমার সাথে রিলেশন রাখবো না। তোমার পরিচিতরা আমাকে নিয়ে কথা বলে।
সোজা কথা যতরকম মিথ্যা বলা যায় বলে যেতে হবে।
ইমোশোনাল ব্ল্যাক মেইল
ইমোশোনাল ব্ল্যাকমেইল একটা গুরত্বপূর্ন পর্যায়। এ পর্যায়ে বলতে পারেন নিচের কথাগুলো।
- আমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে আমি টেরাকের নিচে লাফ দিমু।
- আজই আমি হাত কেটে ফেলবো। আউউউউউউউউউ... কেটে ফেলেছি তিন চতুর্থাংশ।(এই হাত আবার আপনাকে আবার পরের দিন কাটতে হবে কিন্তু। এক হাত যে কয়বার কাটতে হবে! আল্লাহ মালুম।)
- আমার জ্বর। আহা। উহু। সারারাত তোমার কথা চিন্তা করি।
- আমি কি তোমাকে কম ভালোবাসছিলাম?
- আমি ছাদ থেকে লাফ দেবো।
অভিনয়ঃ
এই ধাপটাও গুরত্বপূর্ন। কারণ যা সত্যি সেটাকে প্রমান করতে হয় না। যা মিথ্যা সেটাকেই প্রমান করতে হয়। আসুন কিছু অভিনয় শিখে নেই।
- আপনি ইচ্ছামতো অন্যের সাথে ডেটিং-এ যাচ্ছেন। সেটা কোন সমস্যা না। কিন্তু আপনার পার্টনারের মাঝে সন্দেহজনক(আসলে সেটা কিছুই নয়, আপনি নিজেও জানেন সেটা। অথবা এমনও হতে পারে, আপনি নিজে যেমন সবাইকে তাই মনে করেন) কিছু দেখলে সেটাকে চেপে ধরুন। তিলকে বানিয়ে ফেলুন তাল। ওটা নিয়ে প্যাচাতে থাকুন। কৃতৃমভাবে হলেও বুঝান "আইলাভু"।
- ফোনে জানান, তোমার দেয়া কষ্ট পেয়ে আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। কাল সারা রাত পিজিতে ছিলাম।
- বলুন, তোমাকে ভালোবেসে এই মাত্র ২০ টা ঘুমের অষুধ খেয়েছি(লুলজ)
- পার্টনারকে চাপের মধ্যে রাখার জন্য দিনে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২৩ ঘন্টাই অসুস্থ থাকার ভান করুন।
- আপনার মেকি প্রেমকে বিশ্বাসযোগ্য করতে জানান, "আমাদের রিলেশনের কথা ফ্যামিলিকে জানিয়েছি"। পার্টনার ভাববে, "বাপ্রে! কি সাংঘাতিক পিরিতি"
ধরা পড়ে যাবার পরে(ধরা দেবেন না কিন্তু; ধরা পড়বেন। আপনি কি এতো বোকা না কি যে ধরা দিবেন? হুহু!)
"এক দিন তুমি পড়বে ধরা রে বন্ধু" এই গানটার মতোই ধরা পড়ে যাবেন একদিন। তখন? আপনার লাম্পট্যের কথা জেনে যাবে সবাই। পরিস্থিতি তখন অনেকটাই আপনার আওতার বাইরে। কি করবেন এখন?
আলাদা আলাদা ভাবে দুই পার্টনারকে সময় দিন।
- (হাউ মাউ করে কান্নাকাটি করে)। আমি পা ফস্কে ফেলেছি। ফিরতে চাই। (মাগনা উপদেশঃ first deserve then desire)
- শেষ পর্যন্ত আমি তোমাকে চাইছিলাম।
- ওর সাথে ডেট-এ গেলেও আসলে আমার চিন্তা চেতনায় কেবল তুমিই ছিলা।
** বিদ্রঃ দুই পার্টনারকেই এটা বলতে হবে। মানে হাতে রাখতে হবে দুইজনকেই।
পার্টনার তখন অনেক সচেতন। সে আর ভুল করতে রাজি না। ইমোশোন হয়েছে অনেক। এবার সে আপনাকে বলতে পারে-
- সরি। এবার ফিরে আসতে চাইলে ঐ ছেলে/মেয়েকে ব্লক করতে হবে। পারবা?
কিন্তু আপনি তো মহা ধুরন্দর। এইবারও পিছলাবেন। বলতে পারেন নিচের কথাগুলো।
- দেখো সেও ভালো ছেলে। তাকে কিভাবে ব্লক করবো?
পার্টনারঃ আচ্ছা তাহলে আমি ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে কথা বলবো এবার। সব জানিয়ে আবার তোমাকে ফিরিয়ে নেবো।
- না। (কান্নাকাটি)
দুই যায়গায়ই এই কথোপকথন চালিয়ে যাবেন।
ধরা পড়ে যাবার পর স্বাভাবিকভাবেই চারদিকে ছিঃ ছিঃ রব উঠবে। অনেকেই অনেক কথা বলবে। জাতীয় পত্রিকায়ও হাসাহাসি হতে পারে আপনাকে নিয়ে। এসব শুনে আপনার কুম্ভকর্নের ঘুমে থাকা আত্মসম্মানবোধ হঠাৎ জেগে উঠবে ক্ষনিকের জন্য। অভিমানের স্বরে বলবেনঃ
- ওমুক আমাকে নিয়ে খারাপ কথা বলে। তাই অমুক খারাপ।(আসলে খারাপ কে?)
- তমুক আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে। আমার চরিত্র খারাপ হলেই কি প্রশ্ন তুলতে হবে? তমুকও বদ।
- ছিহ! এভাবে সবাই হাটে হাড়ি ভাঙ্গে?
এক পর্যায়ে পার্টনার অথবা পার্টনারদ্বয় বুঝে যাবে আপনি কি। মুখোশ উন্মোচিত হবে আপনার। আপনার সাথে দুরত্ব সৃষ্টি করবে সে/তারা।
সব শেষে "এই তোমার ভালোবাসা?" বলে আপনি ফুটে যান।
"চোরের মায়ের বড় গলা" কথাটাকে মনে করুন। আপনাকেও এমন হতে হবে। গলার সাউন্ড কমানো যাবে না একদম। উচু স্বরের কথা দিয়ে নিজের লাম্পট্যকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করে যান।
ও হ্যা। পুংটা ছেলেপেলে আপনাদের মতো মানুষের মুখোশ উন্মোচন করে এরকম পোস্ট দিয়ে দিতে পারে।
পোস্ট দেখে মুখ কুচকে বলুন ছিহ(যথারীতি হ-এর উপর জোর দিয়ে)। তারপর খেয়াল করে দেখুন "ছিহ"টা আপনার দিকেই ছুটে আসছে।
তারপর কনফিডেন্স এর সাথে বলুন "আমার লাইফ নষ্ট করতে পারবে না কেউ"(ফর ইউর কাইন্ড ইনফরম্যাশন, পচা আলুকে আর পচানো যায় না। সুতরাং কেউ আপনার লাইফ নষ্ট করছে না। বরং এই পোস্টটাকে ধরে নিন পচা আলুর জন্য এক বোতল ফরমালিন হিসেবে)
উপরের পুরো প্রক্রিয়া কারো কৃতকর্মের সাথে সম্পুর্ন বা আংশিক মিলে গেলে ঐ পারভার্টের কুৎসিত মুখ বরাবর থাকলো আমার মুখের এক দলা থু থু।
নেটে পড়ছিলাম হ্যাকিং-এর টিউটোরিয়াল। এক যায়গায় লেখা দেখলাম "হ্যাকিং থেকে বাচার সব চেয়ে কার্যকর উপায় হলো হ্যাকিংটাই শিখে ফেলা।"
কথাটা পড়ার পরেই মনে হলো কম্পিউটার হ্যাকিং এর চেয়েও ভয়াবহ এক রকম হ্যাকিং আছে। সেটা হলো "মন হ্যাকিং"। বলা হয়ে থাকে hacking is not a crime. হ্যা। কম্পিউটার হ্যাকিং এর ক্ষেত্রে কথাটা যায়। কিন্তু মন হ্যাকিং এর ক্ষেত্রে এটা যায় না। বরং এই হ্যাকিংটা হচ্ছে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম ও জঘন্যতম পাপ।
যাই হোক, অই লাইনটার মতো করে বলি, "মন হ্যাকিং থেকে বাচার সব চেয়ে কার্যকর উপায় হলো নিজেই মন হ্যাকিং শিখে ফেলা"।
এই পোস্ট-টা আসলে লেখা হয়েছে এই দৃষ্টিকোন থেকেই।
তাহলে শুরু করা যাক আমাদের টিউটোরিয়াল।
মালটিপল রিলেশন কি?
উত্তরঃ মান ও হুশ-এর অভাবে একই সময়ে একাধিক ছেলে/মেয়ের সাথে প্রেম চালিয়ে(প্রতারনার সাথে) যাওয়াকে বলা হয়ে থাকে মালটিপল রিলেশন।
উদাহারণঃ মেয়ে ১ প্রেম করছে ছেলে ১ এর সাথে। হঠাৎ করে মেয়ে ১ ছেলে ২ এর সাথে প্রেম করা ডেটিং-এ যাওয়া শুরু করলো। এই অবস্থাকে বলা হয়ে থাকে মাল্টিপল রিলেশন।
কেন মানুষ মাল্টিপল রিলেশনে জড়ায়ঃ
১। পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার।
২। যথাযথ পারিবারিক শিক্ষার অভাব।
৩। নৈতিক শিক্ষার অভাব।
৪। বিকৃত মানষিকতা।
৫। চারিত্রিক অধঃপতন।
প্রথম ধাপঃ
এই ধাপে আপনাকে কিছু ব্যাপার একদম ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। ব্যাপারগুলো হলোঃ
> আত্মসম্মানবোধ
> মনুষত্ব
> বিবেকবোধ
> মান+হুশ
> লজ্জা
দ্বিতীয় ধাপঃ
এই ধাপে আপনাকে কিছু ব্যাপার অর্জন করতে হবে। ব্যাপারগুলো হলোঃ
> পৈশাচিকতা
> মিথ্যা বলার অপূর্ব ক্ষমতা
> প্রতারণা করতে একটুও কেপে উঠেনা এ রকম একটা হার্ট
> অসম্ভব রকম চতুর বুদ্ধি
> কান্নাকাটি করার ক্ষমতা(মেয়েদের ক্ষেত্রে)
> স্ট্রিক্টলি কিছু বলে ফেলার ক্ষমতা(ছেলেদের ক্ষেত্রে)
> অভিনয় করার অপূর্ব গুন।
> ইমোশোনালী ব্ল্যাকমেইল করায় অসম্ভব দক্ষতা।
> ভন্ডামি।
পার্টনার নির্বাচন-
এই ধাপে আপনাকে নিচের সতর্কতাগুলো অনুসরণ করত হবে।
> প্রথমেই নির্বাচন করুন দু-জন ভালো মানুষ।
> কারণ ভালো মানুষরা সবাইকে ভালো মনে করে।
> আপনার মতো কুৎসিত চিন্তাভাবনার কেউ হলে সমস্যা। পার্টনার কুৎসিত/লম্পট হলে আপনার লাম্পট্যও(সরি, আপনার জন্য এর চেয়ে সভ্য কোন শব্দ আমি খোজে পাচ্ছি না) ধরা পড়ার চান্স থাকবে বেশি।
বাড়তি সতর্কতা
> দুজন পার্টনার যাতে একে অপরের পরিচিত না হয়।
> পরিচিত হলে বিরাট বিপদ। এ ক্ষেত্রে এমন ব্যাবস্থা করুন যাতে তাদের দুজনের দেখা বা কথা না হয়।
জটিলতা মোকাবেলা
এই ধাপটা হচ্ছে সব চেয়ে ভয়ংকর ও গুরত্বপূর্ন ধাপ। এই ধাপের নির্ভর করছে অনেক কিছু।
স্বাভাবিকভাবেই দুই পার্টনারের কাছ থেকে শুনবেন অসংখ্য প্রশ্ন। এই ধাপে আপনাকে কমন কিছু প্রশ্ন ও সেইসব প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে ধারণা দেয়া হলোঃ
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে তোমার এতো কি?
উত্তরঃ ঐ ছেলে/মেয়ে আমার ফ্রেন্ড। বেস্ট ফ্রেন্ড। মহা আপনা বান্ধব।(কন্ঠে কনফিডেন্স ঝরে পড়বে)
প্রশ্নঃ তোমার বয়/গার্ল ফ্রেন্ডের থেকে ঐ ছেলে/মেয়েকে প্রাধান্য দিচ্ছো কেনো?
উত্তরঃ তোমার কারনে আমি একটা ফ্রেন্ডশিপও রাখতে পারবো না? ছিহহহ(হ এর উপর জোর দিন)। তুমি এতো খারাপ? তোমার মন এতো ছোট?(আহা! আপনার মন বিরাট বড়। এক মনে কতোজনকে যায়গা দিতে পারেন। মাশআল্লাহ!)
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়েকে আমাদের রিলেশনের কথা জানাচ্ছো না কেনো?
উত্তরঃ আমি কেনো তাকে আমার ব্যাক্তিগত ব্যাপারে জানাবো?(উলে বাবা!)
প্রশ্নঃ দুনিয়ার সবাইকে জানাচ্ছো। ওকে জানাতে সমস্যা কি?
উত্তরঃ কান্নাকাটি(কারণ এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে নেই)
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে যোগাযোগ কমাবা?
উত্তরঃ কমাবো।(হা হা!)
স্বাভাবিকভাবেই আপনি যোগাযোগ কমাতে পারবেন না। তখন আবার প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন।
প্রশ্নঃ তুমি কাকে চাও? আমাকে না তোমার ফ্রেন্ডকে?
উত্তরঃ ছিহ। তুমি আমাকে সন্দেহ করো? (ন্দ এর উপর জোর দিয়ে)
প্রশ্নঃ প্লিজ, সব কিছু ক্লিয়ার করো। আমি পেইনে আছি।
উত্তরঃ তুমি আমাকে লম্পট/প্রস্টিটিউট মনে করো?(খেয়াল করে দেখুন। আপনি নিজেই কিন্তু নিজেকে লম্পট/প্রস্টিটিউট হিসেবে স্বিকৃতি দিচ্ছেন। হা হা হা)
প্রশ্নঃ ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে ফোনে কথা হয় তোমার?
উত্তরঃ নাহ। ওকে আমি ব্লক করবো পরে। টাকা ভরে নেই ফোনে।(আরে ধুর। ব্লক করতে হবে না। টাকা ভরে আবার রোমান্টিক কথোপকথন শুরু করবেন। ব্লক করতে যাবেন কেনো?)
এক পর্যায়ে দুই পার্টনারই আপনাকে চাপ দিবে। ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে তৃতীয় ছেলে/মেয়েকে বাদ দেয়ার জন্য।
এই ধাপটার আপনার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ। আপনি কাকে বাদ দিবেন?
সিদ্ধান্ত নিন নিচের ব্যাপারগুলো উপর ভিত্তি করে।
- কে আপনার জন্য বেশি ডেডিকেটেড?
- কে আপনি যাই করবেন তা মেনে নিবে?
- কে আপনার সব অন্যায় দেখেও বেশিরভাগ সময় বিশ্বাসের উপর জোর দিয়ে ভুলে যায় সব?
- কাকে আপনি সব চেয়ে ইজিলি ইউজ করতে পারেন?
উত্তর যার পক্ষে যাবে তাকেই ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে কাটুন।
পরবর্তিতে যুক্তি দেখানঃ
- এই জানো? আমার ভাইয়া না আমার ফেসবুক মনিটরিং করে।
- তুমি আমাকে লাইফে চাও নাকি ফেসবুকে চাও?
- ছিহ! আমাকে পাওয়ার জন্য ফেসবুক থেকে কাটতে পারবা না? এই তোমার ভালোবাসা?
কি বললেন? জঘন্য মিথ্যা আর প্রতারনার জন্য তীব্র অপরাধবোধ সৃষ্টি হবে? আরে ধুর। "অপরাধবোধ" শব্দটা কেবল মানুষের সাথেই যায়। সৌভাগ্যজনকভাবে আপনি এটা অনুভব করে কষ্ট পাবেন না। কারণ আপনার মাঝে ন্যুনতম মনুষত্বও নেই(সরি টু স্যা)।
মোবাইল সংক্রান্ত ঝামেলাঃ
যেহেতু একসাথে একাধিক প্রেম করছেন তাই বিভিন্ন সময় আপনাকে ফোনে কথা চালিয়ে যেতে হবে। কল ওয়েটিং কিংবা বিজি রাখলে সমস্যা হতে পারে। তাই বিজি ডাইভার্ট করে রাখুন।
এক পার্টনারের সাথে কথা বলার সময় অন্য পার্টনার ট্রাই করবে। পরবর্তিতে প্রশ্নের সম্মুখিন হবেন। সমস্যা নেই। উত্তর আছে রেডিমেইড।
- আরে ধুর! মা ফোন করেছিলেন।
- কথা বলছিলাম ফুপাতো বোনের চাচার ছোট মেয়ের দাদার আপন ছেলের সাথে(প্রায় ঘন্টা খানেক কথা বলছিলেন কিন্তু)
- আমার টিচার ফোন করেছিলেন।
- নোট বুঝে নিচ্ছিলাম।
ইত্যাদি ইত্যাদি...।
ডেটিং সংক্রান্ত ঝামেলাঃ
যেহেতু দুই যায়গায় করছেন প্রেম সেহেতু ডেটিং-এও যেতে হবে। একজনের সাথে ডেটিং-এ যাওয়ার পর অন্যজনকে বুঝ দিতে পারেন এভাবেঃ
- এই আজকে না আব্বুর অফিসে যাবো। তুমি এর মাঝে আমাকে ফোন দিও না।
- এখন যাবো অগ্রনী ব্যাংকে। ওখানে ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত ঝামেলা আছে কিছু আমার।
- একটু শপিং-এ যাচ্ছি।
- বাংলাদেশ ব্যাংকে যাবো। কাজ আছে।
নির্লজ্জ্বতা আর নষ্টামীর সব সীমা অতিক্রম করুন এভাবেঃ
- এক পার্টনারকে বলুন অন্য পার্টনার আপনার রিলেশনে ঝামেলা করছে।
- এক পার্টনারের কাছ থেকে এস এম এস নিয়ে অন্য পার্টনারকে খুশি করুন।
- ফেসবুকে অপেনলি চালিয়ে যান দুইটা প্রেম।
- কেউ কিছু বললে চোখ বন্ধ করে অস্বীকার করুন সব।
আনুসাঙ্গিক ঝামেলা মোকাবেলাঃ
ফেসবুকে আপনার লাম্পট্য দেখবে অনেকেই। পার্টনারের ভাই ব্রাদাররা সেটা দেখে আপনাকে ভালো রকম সন্দেহ করবে। অনেকে বলবে অনেক কথা। আপনার ওসব গায়ে মাখলে চলবে না। হাজার হোক আত্মসম্মানবোধ তো আপনার নেই! যাই হোক এই পরিস্থিতি ট্যাকল করবেন এভাবেঃ
- ও আমাকে এরকম কথা বললো। আমি নাকি দুইটা প্রেম করি। ওকে ব্লক করো।
- তোমার সাথে রিলেশন রাখবো না। তোমার পরিচিতরা আমাকে নিয়ে কথা বলে।
সোজা কথা যতরকম মিথ্যা বলা যায় বলে যেতে হবে।
ইমোশোনাল ব্ল্যাক মেইল
ইমোশোনাল ব্ল্যাকমেইল একটা গুরত্বপূর্ন পর্যায়। এ পর্যায়ে বলতে পারেন নিচের কথাগুলো।
- আমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে আমি টেরাকের নিচে লাফ দিমু।
- আজই আমি হাত কেটে ফেলবো। আউউউউউউউউউ... কেটে ফেলেছি তিন চতুর্থাংশ।(এই হাত আবার আপনাকে আবার পরের দিন কাটতে হবে কিন্তু। এক হাত যে কয়বার কাটতে হবে! আল্লাহ মালুম।)
- আমার জ্বর। আহা। উহু। সারারাত তোমার কথা চিন্তা করি।
- আমি কি তোমাকে কম ভালোবাসছিলাম?
- আমি ছাদ থেকে লাফ দেবো।
অভিনয়ঃ
এই ধাপটাও গুরত্বপূর্ন। কারণ যা সত্যি সেটাকে প্রমান করতে হয় না। যা মিথ্যা সেটাকেই প্রমান করতে হয়। আসুন কিছু অভিনয় শিখে নেই।
- আপনি ইচ্ছামতো অন্যের সাথে ডেটিং-এ যাচ্ছেন। সেটা কোন সমস্যা না। কিন্তু আপনার পার্টনারের মাঝে সন্দেহজনক(আসলে সেটা কিছুই নয়, আপনি নিজেও জানেন সেটা। অথবা এমনও হতে পারে, আপনি নিজে যেমন সবাইকে তাই মনে করেন) কিছু দেখলে সেটাকে চেপে ধরুন। তিলকে বানিয়ে ফেলুন তাল। ওটা নিয়ে প্যাচাতে থাকুন। কৃতৃমভাবে হলেও বুঝান "আইলাভু"।
- ফোনে জানান, তোমার দেয়া কষ্ট পেয়ে আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। কাল সারা রাত পিজিতে ছিলাম।
- বলুন, তোমাকে ভালোবেসে এই মাত্র ২০ টা ঘুমের অষুধ খেয়েছি(লুলজ)
- পার্টনারকে চাপের মধ্যে রাখার জন্য দিনে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২৩ ঘন্টাই অসুস্থ থাকার ভান করুন।
- আপনার মেকি প্রেমকে বিশ্বাসযোগ্য করতে জানান, "আমাদের রিলেশনের কথা ফ্যামিলিকে জানিয়েছি"। পার্টনার ভাববে, "বাপ্রে! কি সাংঘাতিক পিরিতি"
ধরা পড়ে যাবার পরে(ধরা দেবেন না কিন্তু; ধরা পড়বেন। আপনি কি এতো বোকা না কি যে ধরা দিবেন? হুহু!)
"এক দিন তুমি পড়বে ধরা রে বন্ধু" এই গানটার মতোই ধরা পড়ে যাবেন একদিন। তখন? আপনার লাম্পট্যের কথা জেনে যাবে সবাই। পরিস্থিতি তখন অনেকটাই আপনার আওতার বাইরে। কি করবেন এখন?
আলাদা আলাদা ভাবে দুই পার্টনারকে সময় দিন।
- (হাউ মাউ করে কান্নাকাটি করে)। আমি পা ফস্কে ফেলেছি। ফিরতে চাই। (মাগনা উপদেশঃ first deserve then desire)
- শেষ পর্যন্ত আমি তোমাকে চাইছিলাম।
- ওর সাথে ডেট-এ গেলেও আসলে আমার চিন্তা চেতনায় কেবল তুমিই ছিলা।
** বিদ্রঃ দুই পার্টনারকেই এটা বলতে হবে। মানে হাতে রাখতে হবে দুইজনকেই।
পার্টনার তখন অনেক সচেতন। সে আর ভুল করতে রাজি না। ইমোশোন হয়েছে অনেক। এবার সে আপনাকে বলতে পারে-
- সরি। এবার ফিরে আসতে চাইলে ঐ ছেলে/মেয়েকে ব্লক করতে হবে। পারবা?
কিন্তু আপনি তো মহা ধুরন্দর। এইবারও পিছলাবেন। বলতে পারেন নিচের কথাগুলো।
- দেখো সেও ভালো ছেলে। তাকে কিভাবে ব্লক করবো?
পার্টনারঃ আচ্ছা তাহলে আমি ঐ ছেলে/মেয়ের সাথে কথা বলবো এবার। সব জানিয়ে আবার তোমাকে ফিরিয়ে নেবো।
- না। (কান্নাকাটি)
দুই যায়গায়ই এই কথোপকথন চালিয়ে যাবেন।
ধরা পড়ে যাবার পর স্বাভাবিকভাবেই চারদিকে ছিঃ ছিঃ রব উঠবে। অনেকেই অনেক কথা বলবে। জাতীয় পত্রিকায়ও হাসাহাসি হতে পারে আপনাকে নিয়ে। এসব শুনে আপনার কুম্ভকর্নের ঘুমে থাকা আত্মসম্মানবোধ হঠাৎ জেগে উঠবে ক্ষনিকের জন্য। অভিমানের স্বরে বলবেনঃ
- ওমুক আমাকে নিয়ে খারাপ কথা বলে। তাই অমুক খারাপ।(আসলে খারাপ কে?)
- তমুক আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে। আমার চরিত্র খারাপ হলেই কি প্রশ্ন তুলতে হবে? তমুকও বদ।
- ছিহ! এভাবে সবাই হাটে হাড়ি ভাঙ্গে?
এক পর্যায়ে পার্টনার অথবা পার্টনারদ্বয় বুঝে যাবে আপনি কি। মুখোশ উন্মোচিত হবে আপনার। আপনার সাথে দুরত্ব সৃষ্টি করবে সে/তারা।
সব শেষে "এই তোমার ভালোবাসা?" বলে আপনি ফুটে যান।
"চোরের মায়ের বড় গলা" কথাটাকে মনে করুন। আপনাকেও এমন হতে হবে। গলার সাউন্ড কমানো যাবে না একদম। উচু স্বরের কথা দিয়ে নিজের লাম্পট্যকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করে যান।
ও হ্যা। পুংটা ছেলেপেলে আপনাদের মতো মানুষের মুখোশ উন্মোচন করে এরকম পোস্ট দিয়ে দিতে পারে।
পোস্ট দেখে মুখ কুচকে বলুন ছিহ(যথারীতি হ-এর উপর জোর দিয়ে)। তারপর খেয়াল করে দেখুন "ছিহ"টা আপনার দিকেই ছুটে আসছে।
তারপর কনফিডেন্স এর সাথে বলুন "আমার লাইফ নষ্ট করতে পারবে না কেউ"(ফর ইউর কাইন্ড ইনফরম্যাশন, পচা আলুকে আর পচানো যায় না। সুতরাং কেউ আপনার লাইফ নষ্ট করছে না। বরং এই পোস্টটাকে ধরে নিন পচা আলুর জন্য এক বোতল ফরমালিন হিসেবে)
উপরের পুরো প্রক্রিয়া কারো কৃতকর্মের সাথে সম্পুর্ন বা আংশিক মিলে গেলে ঐ পারভার্টের কুৎসিত মুখ বরাবর থাকলো আমার মুখের এক দলা থু থু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন